‘অত্যন্ত অভদ্র, কোনও কথা মানতে চায় না’। এই অজুহাতে ৮ বছরের সন্তানকে হাসপাতালে ফেলে রেখে গেলেন মা। নিজের সিদ্ধান্তের সপক্ষে সাফাইও দিলেন তিনি।
আমেরিকায় শিশু নিগ্রহে অভিযুক্ত হয়েছেন এক যুবতী। উটাহ রাজ্যের পশ্চিম জর্ডনের জর্ডন ভ্যালি মেডিক্যাল সেন্টার হাসপাতালে চিকিত্সার জন্য নাবালক সন্তানকে ভর্তি করেন তিনি। তারপর হঠাত্ তাকে ছেড়ে চলে যান তিনি। হাসপাতালে ভর্তির সময় যে পোশাক পরে এসেছিল, তা ছাড়া ছেলের জন্য আর কিছুই রেখে যাননি ওই মহিলা। নিজের আচরণের কারণ দর্শিয়ে অবশ্য একটি চিরকুট লিখে গিয়েছিলেন সেই জননী। চিরকুটে তিনি লেখেন, ‘এই বাচ্চা অভদ্র এবং অবাধ্য। একে আমি বাড়িতে কোনও অবস্থাতেই রাখতে চাই না।’
ফক্স ১৩ নিউজ টিভি চ্যানেলে এক সাক্ষাত্কারে মহিলা কবুল করেছেন, ‘নিজেকে কু-মাতা হিসেবে আদৌ মনে করি না। পরিস্থিতি আমাকে অসহায় করে তুলেছিল।’ তাঁর বিরুদ্ধে শিশু নিগ্রহের অভিযোগ দায়ের করেছে প্রশাসন।
আদজালতে এই মামলার শুনানিতে সল্ট লেক সিটি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি সিম জিল মন্তব্য করেন, ‘শিশুদের মারধোর অথবা ত্যাগ করা শারীরিক ও মানসিক নিগ্রহের পর্যায়ে পড়ে। এর কারণে শিশুমনে দীর্ঘ মেয়াদি ক্ষত সৃষ্টি হয়। অসহায় শিশুরা নিজেদের সুরক্ষিত করার কোনও উপায় খুঁজে পায় না।’ তিনি জানান, অবাধ্য শিশুদের নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাওয়া অভিভাবকদের জন্য নানান ব্যবস্থা রয়েছে। সেই পথে না হেঁটে মহিলার এ হেন পদক্ষেপ সমর্থনযোগ্য নয়।
অভিযুক্ত মহিলাকে শিশু নিগ্রহ এবং পরিত্যাগের কারণে দণ্ডিত করেছে আমেরিকার আদালত। মামলার নথিতে অন্তর্ভুক্ত শিশুর বয়ান অনুযায়ী, তাকে প্রায়ই চামচ ছুঁড়ে আঘাত করতেন মা। তবে আদালতে সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন যুবতী। তিনি জানান, সম্প্রতি স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পর ৪ সন্তানের দেখভালের দায়িত্ব তাঁর ওপরই বর্তায়। বেয়াড়া ছেলেকে একা সামলাতে পারেননি বলে তিনি জানিয়েছেন। নিজের বক্তব্যের সমর্থনে উল্লেখ করেন, ‘ও আমার নামে টিপ্পনি কাটত। প্রকাশ্যে নিজের প্যান্ট খুলে অসভ্যতা করত।’
আদালতের নির্দেশে মামলা চলাকালীন ওই নাবালক ছেলেটিকে সরকার নির্দিষ্ট পালক পরিবারে রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে তার বাবা-মা আবার একত্রে বসবাস শুরু করেছেন। ছেলের সঙ্গে নিয়মিত দেখা করতে পালক পরিবারের বাড়িতে হাজির হচ্ছেন সেই মা, জানিয়েছে পুলিশ। তাঁর দাবি, ছেলে এবার নিজের বাড়িতে ফিরতে চাইছে।
এদিকে বিচারে দোষী সাব্যস্ত হলে ওই যুবতীর ৬ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে বলসে আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে।